করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জেলা প্রশাসন এর মোবাইল কোর্ট অভিযান দুই জনকে ১ মাসের জেল ৮ হাজার টাকা জরিমানা।
বরিশাল জেলা প্রশাসনের নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজও বরিশাল নগরীতে মোবাইল কোর্ট অভিযান অব্যাহত আছে। আজ ১৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বরিশাল মহানগরীর বাজার রোড,কাঠপট্টি, সদর রোড, পোর্ট রোড, চকবাজার রোড, বগুড়া রোড, আমতলার মোড়, চকবাজার, ব্রাউন কম্পাউন্ড রোড, পুলিশ লাইন রোড, আমতলার মোড়, সদর রোড, বাংলাবাজার এলাকায় জেলা প্রশাসন বরিশাল এর পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্ট এর অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালে জনসমাগম করে অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রেখে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বরিশাল জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে ৫ টি দোকান কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং দুই জনকে ১ মাসের জেলা প্রদান করা হয়। নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অধিক মানুষের সমাগম এবং চায়ের দোকানসহ অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রাখা থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা পালনের পাশাপাশি গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, অজিয়র রহমানের নির্দেশনায় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বরিশাল মোঃ জিয়াউর রহমান এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মোঃ হেলাল উদ্দীন। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে গণসচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি এ সময় বিভিন্ন টি-স্টল, মুদি দোকান ও এলাকার মোড়ে মোড়ে যেখানেই জনসমাগম দেখা গেছে তা ছত্রভঙ্গ করা হয় এবং নিরাপদ দূরত্বে চলার নির্দেশনা, মাক্স পরার নির্দেশনা প্রদানের পাশাপাশি জেলা প্রশাসন এর পক্ষ থেকে মাক্স বিতরণ করা হয়। এসময় সবাইকে যৌক্তিক প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে আসতে নিষেধ করা হয় এবং সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে জরুরি ঔষধ ব্যতীত সকল প্রকার দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়। এসময় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনায় করেন বরিশাল জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জিয়াউর রহমান। এসময় নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা কালে নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ড রোডে ১ টি স্টিলের দোকান এবং আমতলা মোড় এলাকায় ১ টি চায়ের দোকান ও ১ টি জুতার দোকান খোলা রেখে ভেতরে ক্ষেত্রবিশেষে প্রায় ৬-৮ জন করে আড্ডারত অবস্থার পাওয়া যায়। এভাবে অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা লোকসমাগম করে সরকারী আদেশ অমান্য করায় এবং করোনা ভাইরাস বিস্তারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করার অপরাধে বর্ণিত ৩টি দোকানকে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর ২৫(১) ধারা এবং দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ২৬৯ ধারায় বিভিন্ন অংকে মোট ৪ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। এসময় পুলিশ লাইন রোডে মেসার্স জে আহমেদ এন্ড কোং নামের একটি প্রতিষ্ঠানে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড সিগারেট কোম্পানি জনসমাগম করে সামাজিক দূরত্ব না মেনে গাদাগাদি করে প্রায় ২০০ জন ছোট-বড়ো সিগারেট ব্যবসাহিকে জড়ো করে সিগারেট বিক্রির কার্যক্রম পরিচালনা করছিলো। ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত হয়ে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট লোকজনের সাথে কথা বলে জানতে পারেন এসআর এর মাধ্যমে আগে থেকে তারিখ ঘোষণা করে তাদেরকে ফোন করে আনা হয়েছে সিগারেট দেবাট জন্য। এভাবে অপ্রয়োজনীয় কারখানা খোলা রেখে জনসমাগম ঘটিয়ে মহামারী করোনা ভাইরাস এর ঝুঁকি বৃদ্ধি করায় কোম্পানির দুই জন সুপারভাইজার এম নয়ন (৩৬) এবং মোঃ মারুফ হোসেন (২৯) কে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ২৬৯ ধারায় ১ (এক) মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। অভিযানে প্রসিকিউসন অফিসার হিসাবে সহযোগিতা করেন উপজেলা স্যানিটারি অফিসার ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মোঃ জাকির হোসেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা সহযোগিতা করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম। অপরদিকে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে জনসচেতনতা তৈরি, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ এবং জনসমাগম প্রতিরোধের লক্ষ্যে অন্যান্য দিনের মত আজও অভিযানকালে কাঠপট্টি রোড এলাকায় ইলেকট্রিক সামগ্রীর দোকান খোলা রেখে জনসমাগমের মাধ্যমে অবহেলাজনিত কার্য দ্বারা জীবন বিপন্নকারী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা আছে এরূপ কার্য করায় দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ধারা ২৬৯ মোতাবেক ২টি প্রতিষ্ঠানকে ২ হাজার টাকা করে মোট ৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় আইনশৃংখলা রক্ষায় সহযোগিতা করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম। অভিযান শেষে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদ্বয় বলেন, জনগণকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা এবং করোনা ভাইরাসের বিস্তার এবং এটিকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীদের বাজার অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা রোধকল্পে জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, অজিয়র রহমান সদা সচেষ্ট এবং তাঁর নির্দেশনায় নিয়মিত এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।