বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন
EN

জীবনের শেষ মূহুর্তে পেলেন বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার খেতাব। বরিশাল মহানগরীর একমাত্র বীরাঙ্গনা মোসাঃ হাজেরা বেগম।

রিপোর্টারের নাম / ১৭৪ টাইম ভিউ
হালনাগাদ : রবিবার, ২৭ জুন, ২০২১

১৯৭১ সালের ৯ মাসের দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শাহাদতবরণ করেছেন এবং সম্ভ্রম হারিয়েছেন দুই লাখ মা-বোন। সেই দুই লাখ মা-বোনদের একজন বরিশাল মহানগরীর একমাত্র বীরাঙ্গনা মোসাঃ হাজেরা বেগম। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে জীবনের শেষ মূহুর্তে পেলেন জাতীর শ্রেষ্ঠ সম্মান বীরাঙ্গনা খেতাব। বীরাঙ্গনাদের পুনর্বাসনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর অবদান ইতিহাস শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের সামাজিক স্বীকৃতি ও সম্মান প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু তাদের দিয়েছিলেন ‘বীরাঙ্গনা’ উপাধি। আজ স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে বরিশাল মহানগরীর একমাত্র বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার খেতাব পেলেন মোসাঃ হাজেরা বেগম। হাজেরা বেগমের বর্তমান বয়স ৭০ বছর, ১৯৭১ সালে তার বয়স ছিল ১৮ বছর। তার বাবা কামিন উদ্দিন চৌকদার, মাতা সুরাতুন নেছা উজিরপুর উপজেলার দাসের হাট ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামে বসবাস করতেন। তার বাবা দিনমজুর ছিলেন তারা দুই বোন ১ ভাই । হাজেরা বেগম ৫ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। তিনি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধর সময় নিজ বাড়ি থেকে বোনের শশুর বাড়ি বরিশাল যাবার পথে বাবুগঞ্জ রহমতপুর ক্যাম্পের সন্নিকটে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী কর্তৃক শারীরিক ও মানুষিক ভাবে নির্যাতিত হয় হাজেরা বেগম। দুর্বিষহ সেই স্মৃতির কথা মনে করতেই কেঁদে ফেললেন হাজেরা বেগম। দেশ স্বাধীন হবার পরে ১৯৭২ সালে তার দ্বিতীয় বিবাহ হয় তার স্বামী মোঃ জালাল হোসেন বরিশাল নগরীর পুরানপাড়া ৩ নং ওয়ার্ড বিবিসি এলাকায় বসবাস করেন। তিনি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল বিস্কুট কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তাদের ৩ ছেলে ১ মেয়ে। স্বাধীনতার এতো বলছ পর ২০১৬ সালে বরিশাল মহানগর থেকে ১ জন বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে হাজেরা বেগম মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয় মন্ত্রণালয় যাচাই বাছাই শেষে বীরাঙ্গনা গেজেট ৩৮১ প্রকাশ করে চলমান ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের জুলাই ২০২০ মাস হতে তার অনুকূলে বরাদ্দ ছাড় করে। আজ ২৭ জুন জেলা প্রশাসক বরিশাল এর সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিক ভাবে জেলা প্রশাসক বরিশাল জসীম উদ্দীন হায়দার তার হাতে ৮২ হাজার টাকার মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ভাতা তুলে দেন। এসময় সম্মানি ভাতা পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পরেন হাজেরা বেগম। এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বরিশাল প্রশান্ত কুমার দাস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) বরিশাল মোঃ সোহেল মারুফ, সহকারী কমিশনার (সাধারণ শাখা) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় মোঃ আবদুল হাই, প্রবেশন অফিসার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বরিশাল সাজ্জাদ পারভেজ। এসময় জেলা প্রশাসক বরিশাল জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে, ২১শে ফেব্রুয়ারি নারীরাই প্রথম পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ১৪৪ ধারা অমান্য করে মিছিল করেছিল। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও রয়েছে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ অংশগ্রহণ। নতুন প্রজন্মের কাছে নারীদের এই অসামান্য কীর্তিগাথা তুলে ধরার এখনই সময়ের দাবি। আমরা হাজেরা বেগমের মতো মহীয়সী নারীদের সম্মানে আমরা সম্মানিত। এই দেশের মানুষ আপনাদের ভুলবেনা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:

বরিশাল-৮২০০।

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:

নিউজ রুম মোবাইল:: 0088-01719-390602, 0088-01818-323306

editor@chandradvip24.com(সম্পাদক)
editor@chandradvip24.com(নিউজ)
editor@chandradvip24.com(নিউজ)
২০২২ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত chandradvip24.com